Nov 30, 2017

বাংলা লাভ স্টোরি ভালবাসার গল্প

প্রেম ও ভালবাসার গল্প

প্রতিশোধ অন্যভাবেও নেওয়া যায়
--- দেখ রিফা ছেলেটি আজকেও এখানে দাড়িয়ে রয়েছে.. দেখ তোর দিকে কিভাবে তাকিয়ে আছে...?
--- হুম, সেতো প্রতিদিনই দেখি আজকে আর নতুন করে কি দেখব।
রিফা আরিফের দিকে তাকাতেই সে অন্যদিকে তাকায়,যেন আরিফ অন্য কারোর জন্য অপেক্ষা করছে।
রিফা স্কুলে যাওয়ার সময় আরিফ রাস্তায় দাড়িয়ে থাকত। রিফাকে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখত, আবার দেখা শেষ হলে চলে যেত। কিন্তু রিফাকে কোন দিন প্রপোজ করনি এমনকি তার সামনে চোখ তুলে তাকাইনি।
সামনে যাওয়ার সাহস তার কখনোই হয়নি কারন, সে দেখতে তেমন ভাল ছিল না। গায়ের কাপড়া অনেক দিনের পুরানো, মাথার চুলগুলো রুক্ষ আর অনেক বড়। দেখতে প্রায় একটা পাগলের মতোই।
একদিন রিফা স্কুলে যাচ্ছিল, সেদিনও আরিফ একই জায়গায় দাড়ানো ছিল। আরিফ রিফার দিকে তাকাতেই দেখতে পেল রিফা তার দিকে চোখগুলো বড় বড় করে তাকিয়ে রয়েছে, বোঝা যাচ্ছিল রিফা তার উপর প্রচন্ড রেগে আছে। সে তীব্র গতিতে রিফা আরিফের কাছে আসে, আরিফ তাতে রীতিমত ভয় পেয়ে যায়। রিফা তাকে জোড়ে একটা থাপ্পর মারে। রাস্তার সবাই তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে কিছু লোক আরিফকে মারতেও আসে। সেদিন মাঝ রাস্তায় রিফা তাকে প্রচন্ড অপমান করে। আরিফ তখন সেখান থেকে চলে আসে। সেই অপমানের পরেও পরদিন আবার একই জায়গায় দাড়িয়ে থাকে আর সেদিন অপমান করে রিফার বান্ধবী। সে বলতে লাগল :-- কি মনে কর নিজেকে..? তুমি একবার নিজের দিকে তাকিয়ে দেখ তোমার অবস্থা কেমন, দেখতে আস্ত একটা পাগলের মতো। সারা জীবন এখানে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে পারবে কিন্তু রিফাকে কখনো কাছের কেউ মনে করলে ভুল হবে। কারন, সে পাগলকে কখনো ভালবাসবে না। আমি আমার বান্ধবীকে ভাল করেই জানি।
তখন আরিফ একটি কথায় বলে আমিও একদিন এর প্রতিশোধ নেব তখন তোমরা সবাই তাকিয়ে থাকবে। আমার এরকম অবহেলা কষ্ট একদিন ঠিকই তোমরা বোঝতে পারবে, এই কথা বলে আরিফ চলে আসে। আর পাঁচ-ছয় দিন ধরে আরিফ রিফাকে দেখার জন্য সেখানে অপেক্ষা করত না। রিফা ও তার বান্ধবী তাতে বেশ খুশি হয়েছিল। তারা একে অপরকে বলতে লাগল এক দিনে হয়তো উচিৎ শিক্ষা পেয়েছে। এভাবে আরও কিছুদিন চলতে থাকল।
কিন্তু হঠাৎ একদিন স্কুলে যাওয়ার সময় রিফাকে বাসে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এতে রিফা গুরুতর আহত হয়, শরীর থেকে অধিকাংশ রক্ত ঝরে পড়ে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রিফার এমন অবস্থা জানতে পেরে আরিফ দৌড়ে হাসপাতালে যায়। জরুরি রক্তের দরকার পাশে কোন মানুষ নেই। রিফার বান্ধবী রিফার মা-বাবাকে খবর জানাতে ব্যাস্ত, তখন রিফার সেই রক্ত আরিফ জোগাড় করে এনে দেয়। তখন সে আশঙ্কা মুক্ত হয়। তখন আরিফ সেখান থেকে চলে যায়। রিফা সুস্থ হয়ে জাতে চাইলে তার বান্ধবী সেই আনস্মার্ট পাগলটার কথা বলে আর রিফা তখন কাঁদতে কাঁদতে তার বালিশ ভিজিয়ে ফেলে।
এভাবেই সে প্রতিশোধ নেয়।
কেউ আপনাকে আপমান করবে অথবা থাপ্পর মারবে আর তার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ঠিক তার মতোই আচরন করেন, এটাকে কখনো প্রতিশোধ বলে না। সেটা হচ্ছে বোকামি। আপনি তার প্রতিশোধের জন্য অপেক্ষা করুন আর তার বিপদের দিন তাকে সাহায্য করুন। সাহায্য হচ্ছে সবচেয়ে বড় প্রতিশোধ। কারন, এতে মানুষ নিজের ভুলগুলো বোঝতে পারে।