গৃহবধূর সফলতার গল্প.....কথা বলছিলাম কলকাতার এক প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের সাধারণ এক গৃহবধূ লক্ষী রানীর। স্বামী একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকুরী করে। খুব ভালোই যাচ্ছিল সংসার জীবন। কিন্তু হঠাৎ এক দুর্ঘটনায় স্বামী প্রচন্ড আহত হন। এবং ১ বছরের মতো শয্যাশায়ী হয়ে বিছানায় পড়ে থাকেন। চিকিৎসা করাতে গিয়ে যা সম্বল ছিল তা নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। পাশাপাশি অনেক দেনায় পড়ে যান। কোম্পানী থেকে কিছুটা সাহায্য পেয়েছিল বটে। কিন্তু যা প্রয়োজনের তুলনায় ছিল খুবই সামান্য। স্বামী সন্তান নিয়ে লক্ষী রানী হয়ে পয়ে দিশেহারা। কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না। এদিক ওদিক ছুটোছুটি করেছেন কিন্তু কোন কাজও জুটছিল না। বিয়ের আগে শখের বশে হাতের রাখি বানানোর কাজ শিখেছিলেন। হঠাৎ মনে পড়ে গেল আমিতো রাখি বানাতে পারি। যদি এটা দিয়ে কিছু একটা করা যায়। পাশের বাজারে গিয়ে দোকানদারের সাথে কথা বলে জানতে পারলেন, কোথা থেকে রাখিগুলো তারা কিনে নিয়ে আসেন। সেই মতো ট্রেনে করে নিজ বাড়ি থেকে ৫০ মাইল দূরে সেখানে চলে গেলেন রাখির ফ্যাক্টরির খোঁজ করতে। সেখানে গিয়ে দেখা হলো তার গ্রামের একজন পরিচিত ব্যক্তির সাথে। তাকে বললেন সে রাখি বানাতে পারে যেন তাকে এই কাজটা দেওয়া হয়। অনেক অনুরোধ করে। কাজটা লক্ষী রানী পেয়ে যায়। শুরু হয় তার লড়াই। বাড়িতে বসেই শুরু করে রাখি বানানোর কাজ। আশেপাশের পাড়াপ্রতিবেশি তা দেখে নিজেরাও শেখার আগ্রহ প্রকাশ করলো। সে তাদেরকে শিখিয়ে দিল। এভাবে তার অর্ডার বাড়তে থাকে। সে সঠিক সময়ে তৈরী করে ফ্যাক্টরিতে পৌঁছে দিত। এতে মালিকপক্ষ খুশি হয়ে তাকে সারা বছরের কাজ দেয়। এবং সততা ও নিসঠার সাথে করে মালিকের বিশ্বাস অর্জন করতে সমর্থ হয়। এখন তার অধীনে ৪০ জন মহিলা ও পুরুষ কাজ করে। সারা ভারতে তার উৎপাদিত রাখি বিক্রি হয়। এখন তার আর কোনো দুঃখ নেই, কস্ট নেই। স্বামী এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেনি। কিন্তু স্বামীর চিকিৎসা করাতে কোন অভাব নেই। এখন সে স্বাবলম্বী। পরিবার নিয়ে অনেক খুব সুখী। এই ছিল লক্ষী রানীর জীবনের কঠিন বাস্তবতা, লড়াই সংগ্রামের গল্প। খারাপ সময় আসতেই পারে, তখন বিচলিত না হয়ে সাহস ও ধৈর্য্য নিয়ে তার মোকাবেলা করতে হবে। তাহলে শেষ হাঁসিটা আপনিই হাঁসবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
Oct 26, 2018
গৃহবধূর সফলতার গল্প
✔
Admin
Diterbitkan October 26, 2018
Tags
Related Post
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
EmoticonEmoticon